মঙ্গলবার দিনের বেশিরভাগ সময় ধীর গতিতে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে, যা অবাক করার মতো কিছু নয়। বৃহস্পতিবার ফেডারেল রিজার্ভ তাদের বৈঠকের ফলাফল ঘোষণা করবে, এবং পরবর্তী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন তাও নির্ধারিত হবে। এ ধরনের বড় ইভেন্ট প্রতিদিন বা এমনকি প্রতিমাসেও ঘটে না। এক সপ্তাহ আগে, ফেডের বৈঠকের ফলাফল নিয়ে প্রায় কোনই প্রশ্ন ছিল না। মার্কেটের ট্রেডাররা আশা করছিল যে সুদের হার আরেকবার ০.২৫% কমানো হবে, কিন্তু মার্কিন শ্রমবাজারের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফেড ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করতে পারে। আমরা ফেডের বৈঠক নিয়ে আলোচনা করব, তবে চলুন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে কথা বলি।
মার্কেটে এমন একটি ধারণা চাউর হয়েছে যে ট্রাম্পের বিজয় ডলারের জন্য ইতিবাচক হতে পারে। বেশিরভাগ ট্রেডাররা সম্ভবত দীর্ঘমেয়াদে এটি বোঝাচ্ছেন। যদি ট্রাম্প জয়ী হন, তবে তিনি আরও চার বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন এবং অবশ্যই আবার প্রার্থী হবেন না, কারণ সেটি তার তৃতীয় মেয়াদ হবে। তাত্ত্বিকভাবে, ট্রাম্পের বিজয় ডলারকে পরবর্তী চার বছরের জন্য সমর্থন যোগাতে পারে। তবে, এটি শুধুমাত্র তত্ত্বেই প্রযোজ্য, কারণ পরবর্তী চার বছরে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে, যেমনটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কারেন্সির মূল্যের ওঠানামার দিকে একবার দেখুন। সুতরাং, শুধুমাত্র ট্রাম্প জয়ী হবেন বলে ডলারের দর বৃদ্ধির আশা করা কিছুটা বোকার মতো কাজ হবে।
আবার ডোনাল্ড ট্রাম্প নাও জিততে পারেন। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে কমলা হ্যারিস দুই পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন, অন্যদিকে অন্যান্য কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ট্রাম্প এক পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। এটি আমাদের এই ধারণা দেয় যে উভয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ভোটারদের কাছ থেকে প্রায় সমান সমর্থন পাচ্ছেন। সুতরাং, এটা বলা ভুল হবে যে ট্রাম্প বা হ্যারিসের মধ্যে কেউ নিশ্চিতভাবে জিততে যাচ্ছেন। কোনো প্রার্থী নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেননি।
তদুপরি, ভোট গণনা করতে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগতে পারে। সাধারণত, যদি একজন প্রার্থী এমনভাবে এগিয়ে থাকেন যে অপর প্রার্থীর পক্ষে তা ধরে ফেলা সম্ভব না, তাহলে প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়, যা দ্রুত নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করতে সহায়তা করে। কিন্তু যদি ব্যবধান ১০০ ভোটের মতো ছোট হয়, তবে প্রতিটি ব্যালট যত্নসহকারে গণনা করতে হবে। এবং তখন (আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি) ট্রাম্প কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে জালিয়াতির অভিযোগ তুলবেন এবং জয়ের দাবি করে বলবেন যে তার ভোট চুরি হয়েছে। সুতরাং, যদি ট্রাম্প নিরঙ্কুশভাবে জয়ী না হন তাহলে আমরা ইতোমধ্যেই পুনরায় ভোট গণনার পূর্বাভাস দিতে পারি।
এই সময়ে মার্কেটে স্নায়ুচাপ এবং অনিশ্চিত পরিস্থিতি বিরাজ করবে। মার্কেটে এই পেয়ারের দর "বৃদ্ধি" পেতে দেখা যাবে তা নিশ্চিত নয়, তবে সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলের পাশাপাশি, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড এবং ফেডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ব্যাংক দুইটির চেয়ারম্যানরা সম্ভবত এমন মন্তব্য করবেন যা আগে থেকে জানা ছিল না। সুতরাং, এই সপ্তাহটি ঘটনাবহুল হতে যাচ্ছে, এবং সপ্তাহের শেষে দুটি প্রধান কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকে যেতে পারে।
৬ নভেম্বর পর্যন্ত গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের গড় ভোলাটিলিটি হল ৫৯ পিপস, যা "স্বল্প" মাত্রার ভোলাটিলিটি হিসেবে বিবেচিত হয়। আমরা আশা করছি যে বুধবার এই পেয়ারের মূল্য 1.0861 এবং 1.0979 এর লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল নিম্নমুখী হয়েছে, যা বৈশ্বিক নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেয়। CCI ইন্ডিকেটর একাধিক বুলিশ ডাইভারজেন্স তৈরি করেছে, যা আসন্ন কারেকশনের সতর্কবার্তা প্রদান করছে।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
- S1 – 1.0864
- S2 – 1.0803
- S3 – 1.0742
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
- R1 – 1.0925
- R2 – 1.0986
- R3 – 1.1047
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি কারেকশন শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমরা মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতনের পূর্বাভাস দিয়েছি, তাই আমরা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতাকে পুরোপুরি সমর্থন করি। মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যে ফেড সুদের হার কমানোর বিষয়টি মূল্যায়ন করে থাকতে পারে। যদি তা হয়, তাহলে ডলার দরপতনের জন্য কম কারণ রয়েছে, যদিও এর কারণও খুব বেশি নেই। যদি মূল্য মুভিং এভারেজের নিচে থাকে, তবে শর্ট পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে টার্গেট লেভেলে হবে 1.0742 এবং 1.0681। যদি আপনি "শুধুমাত্র" টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করেন, তাহলে লং পজিশন বর্তমানে প্রাসঙ্গিক, টার্গেট লেভেল হবে 1.0979 এবং 1.0986, তবে মনে রাখতে হবে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুধুমাত্র একটি কারেকশন।
চিত্রের ব্যাখা
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।